কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে নতুন এ কমিশনারেটের নাম ব্যবহার করে হয়রানি করা হচ্ছে। যদিও নতুন এই কমিশনারেট এখনও পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করেছি। তবে বিআইএন লক করার মাধ্যমে হয়রানি করার বিষয়টি খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে নতুন এ কমিশনারেট। সেজন্য যে কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে বিআইএন লক করা হয়েছে-তার তালিকা চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি তালিকা দিতে এনবিআরের সিস্টেম এনালিস্টকে এই চিঠি দেয়া হয়। এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। কাস্টমস রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেটের কমিশনার কাজী মোস্তাফিজুর রহমান সই করা চিঠি এনবিআরের সিস্টেম এনালিস্টকে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি দেয়া এ চিঠিতে বলা হয়েছে, গোপন সংবাদদাতা সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন কাস্টম হাউস ও স্টেশন ইতোমধ্যে কাস্টমস রিস্ক ম্যানেজমেন্টের নামে বিভিন্ন আমদানিকারকের বিআইএন লক করছে। কাস্টমস রিস্ক ম্যানেজমেন্টের নামে বিআইএন লক করার ফলাফল তালিকা আকারে জানাতে চিঠিতে অনুরোধ করা হয়। তালিকায় স্টেশন কোড, বিআইএন নম্বর, এইচএস কোড, বিআইএন লককারী কর্মকর্তার নাম ও পদবি, লক করার কারণ, ফলাফল ও জড়িত রাজস্বের বিষয়ে তুলে ধরতে বলা হয়েছে। এনবিআর সূত্রমতে, কাস্টমস রিস্ক ম্যানেজমেন্টে কমিশনারেট নামে নতুন একটি কমিশনারেট অনুমোদন দেয় সরকার। চলতি বছরের ১০ মে ১০৮ জন জনবলের অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে একজন কমিশনার, একজন অতিরিক্ত কমিশনার, চারজন যুগ্ম কমিশনার, ছয়জন উপকমিশনার, ১০ জন সহকারী কমিশনার, তিনজন প্রোগ্রামার, ১২ জন রাজস্ব কর্মকর্তা, ২৪ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, একজন সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর, চারজন উচ্চমান সহকারী, একজন ক্যাশিয়ার, ১৬ জন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, পাঁচজন ড্রাইভার, ১০ জন সিপাই, ১০ জন অফিস সহায়ক রয়েছে। সম্প্রতি রিস্ক ম্যানেজমেন্টে কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার ও কয়েকজন কর্মকর্তা পদায়ন করে এনবিআর। নতুন এই কমিশনারেট কার্যক্রম শুরু করেছে। এই কমিশনারেট সৃষ্টির আগে সব কাস্টম হাউস ও স্টেশনের আওতায় রিস্ক ম্যানেজমেন্টের কাজ শুরু হয়। এই রিস্ক ম্যানেজমেন্টের নামে বিভিন্ন সময় বিআইএন লক করে ব্যবসায়ীদের হয়রানির অভিযোগ ওঠে। সূত্র আরও জানায়, নতুন এ কমিশনারেটের কার্যক্রম চালু হওয়ার পর ঢাকা কাস্টম হাউসের বিরুদ্ধে দুইজন ব্যবসায়ীরা বিআইএন লক করে হয়রানি করার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেট থেকে গোপনে যাচাই করা হয়, যাতে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। বিষয়টি এনবিআরকে জানানোর পর কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। রিস্ক ম্যানেজমেন্টের নামে ঢাকা কাস্টম হাউসে একটি রুম রয়েছে, যেখানে দুইজন কর্মকর্তা বসতেন। সেখানে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হতো। রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেটের তৎপরতার পর রুম থেকে রিস্ক ম্যানেজমেন্টের নামে সাইন বোর্ড সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এনবিআর সূত্রমতে, ঢাকা কাস্টম হাউসের মতো অন্যান্য কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেটের নাম ব্যবহার করে বিআইএন লক করা হচ্ছে বলে আরও অভিযোগ পেয়েছে রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেট। তবে কোনো কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশন লক করেছে, তা জানতে এনবিআরের সিস্টেম এনালিস্টকে এই চিঠি দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কাস্টমস রিস্ক ম্যানেজমেন্টের একজন কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে জানিয়েছেন, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেট কার্যক্রম শুরু করেছে। আমরা রাজস্বসহ যেকোনো ঝুঁকিপূর্ণ চালান, পণ্য শনাক্ত করার কাজ শুরু করেছি। এর মাধ্যমে কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনকে সহযোগিতা করব। তবে অভিযোগ পেয়েছে, আমাদের নামে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করতে বিআইএন লক করা হয়েছে এবং হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আমরা এনবিআরের কাছে তালিকা চেয়েছি। তালিকা পাওয়ার পর এই বিষয়ে করণীয় ঠিক করা হবে।