পদ্মাসেতু দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে বিনিয়োগে ব্যাবসায়ীদেরও আকৃষ্ট করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণও বাড়বে। এছাড়াও পদ্মাসেতু অঞ্চলটিতে নতুন শিল্প স্থাপনে ব্যবসায়ীদের প্রলুব্ধ করবে। এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘একইসঙ্গে খুলনা অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠবে। এখন এই অঞ্চলের বিদ্যমান সড়কগুলোকে পরিকল্পিতভাবে সম্প্রসারিত করতে হবে।’ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সরকারের কাছে প্রস্তাব পেশ করার আহ্বান জানিয়ে কাদির বলেন, যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অঞ্চল থেকে কোন প্রস্তাব পান- তবে তিনি তদানুযায়ী পদক্ষেপ নিবেন। খুলনা নগরীর ময়নাপোতা এলাকার পোলট্রি ব্যবসায়ী মানিক শেখ বলেন, পদ্মাসেতু দেশের শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জনগণকে, বিশেষত দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় বাসিন্দাদের তাঁর কাছে ঋণী করে গেলেন। মানিক আশা করেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা অঞ্চলের অপ্রশস্ত রাস্তাগুলো সম্প্রসারিত করে পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এই অঞ্চলের মানুষ শেখ হাসিনার উপর আস্থাশীল। তিনি নিজেও এই অঞ্চলের উন্নয়নের ব্যাপারে আন্তরিক। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সাদিয়া আফরিন বলেন, পদ্মাসেতু চালু হলেও খুলনায় একটি বিমানবন্দরের দাবি শেষ হয়ে যায় নি। আরো অধিকসংখ্যক দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারী ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে রামপালে নির্মাণাধীন বিমানবন্দরের কাজ চালিয়ে যাওয়া উচিৎ। খুলনা শপিং কমপ্লেক্সের মোবাইল যন্ত্রাংশ বিক্রেতা খাইরুজ্জামান সজিব বলেন, পদ্মাসেতুকে কেন্দ্র করে খুলনা অঞ্চলে একটি শিল্প-বিপ্লব হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারের এখন খুলনায় বন্ধ থাকা পাট, টেক্সটাইল, নিউজপ্রিন্ট ও হার্ডবোর্ড মিলগুলো পুনরায় চালু করতে পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। পদ্মা নদী পারাপারে ফেরিঘাটে মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানান নারী উদ্যোক্তা সুলতানা শিলু। তিনি বলেন, ‘একবার ডাকাতরা ফেরীতে আমাকে হামলা করেছিল। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর, ভবিষ্যতে নারীরা আর এ ধরনের নির্যাতন বা হয়রানির শিকার হবে না।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সেতু নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট অন্যান্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে শিলু বলেন, এখন খুলনা অঞ্চলে বসবাসকারী লোকজন ঢাকায় একটি সভায় যোগদানের পর একদিনের মধ্যে বাড়ি ফিরতে পারবেন। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলকে এর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অংশের সঙ্গে যুক্ত করবে। পদ্মা সেতুর টোল পুনর্বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একবার সেতু চালু হয়ে গেলে, এ অঞ্চলের বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন সহজ হবে ও ট্রানজিট সুবিধা বাড়বে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে এখানে আসবেন। তিনি বলেন, খুলনায় এখন একটি বিমান বন্দর স্থাপন করা জরুরি, কারণ তাতে সুন্দরবন-কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবং বিদেশিরা মংলা ইপিজেডে বিনিয়োগ করতে আসবে। পদ্মা সেতু নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র রয়েছে উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, দেশের মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে কারো রাজনীতি করা উচিত নয়।