আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় পদ্মা ব্যাংকের বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) সংরক্ষণে আবারো বড় ধরনের ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগেও এসএলআর সংরক্ষণের ক্ষেত্রে পদ্মা ব্যাংককে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ছাড় দেয়া হয়েছিল। এবার ছাড়ের মাত্রা আরো বাড়িয়ে সেটি ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পদ্মা ব্যাংককে সিআরআর-এর অতিরিক্ত নগদ জমাসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদের রক্ষণীয় মাত্রা ব্যাংকটির মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের ২০২২ সালে অন্যূন ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশে এবং ২০২৩ সালে অন্যূন ১৩ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছিল। যদিও নীতি ছাড়ের পরও সিআরআর ও এসএলআর সংরক্ষণ করতে পারেনি পদ্মা ব্যাংক। এ অবস্থায় ব্যাংকটিকে আরো বড় ছাড় দিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারের পরামর্শ নেয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, পদ্মা ব্যাংক সিআরআর-এর অতিরিক্ত নগদ জমাসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদের রক্ষণীয় মাত্রা ব্যাংকটির মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অন্যূন ৩ দশমিক ২৫ শতাংশে, ২০২৫ সালে অন্যূন ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে অন্যূন ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ সংরক্ষণ করবে। নতুন আদেশটি ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রাহকদের জমা রাখা অর্থের সুরক্ষার অংশ হিসাবে ব্যাংকগুলোকে আমানতের ১৭ শতাংশ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। নগদ অর্থ ও সরকারি বিল-বন্ড কেনার মাধ্যমে ব্যাংকগুলো এ অর্থ জমা রাখে। এর মধ্যে ৪ শতাংশ অর্থ নগদ জমার হার হিসেবে (সিআরআর) আর বাকি ১৩ শতাংশ এসএলআর হিসেবে রাখতে হয়। কিন্তু আর্থিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে ২০১৭ সাল থেকে সিআরআর ও এসএলআর সংরক্ষরণ করতে ব্যর্থ হয় ফারমার্স ব্যাংক। অনিয়ম-দুর্নীতিতে বিধ্বস্ত হওয়া এ ব্যাংকটিই পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডে রূপান্তর হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সিআরআর ও এসএলআরের অর্থ জমা রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় পদ্মা ব্যাংককে প্রায় ১৪১ কোটি টাকা দণ্ড সুদ ও জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে ৫৫ কোটি টাকা সিআরআরের ও ৮৬ কোটি টাকা এসএলআরের। জরিমানার একটি অংশ মওকুফের পাশাপাশি সেটি পরিশোধে পাঁচ বছর সময় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।