রাজবাড়ী জেলার ৪টি উপজেলা পদ্মা নদী সংলগ্ন হওয়ায় প্রতিবছরই বন্যার পানিতে ফসরি জমি তলিয়ে যায়। এবছরও উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের ১৩টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের আবাদী ফসলি জমি। এতে সাড়ে নয় হাজার বিঘা অপরিপক্ক বাদাম তলিয়ে চরম লোকসানে পড়েছেন বাদাম চাষিরা। বাদামের সাথে তলিয়ে গেছে আরো কয়েক হাজার বিঘা তিল ও পাট। সদর, গোয়ালন্দ, কালুখালী ও পাংশা এ ৪ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পদ্মা নদী সংলগ্ন হওয়ায় প্রতি বছরের মত এবারও পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে এসব এলাকার সাড়ে নয় হাজার বিঘা বাদামসহ আরো কয়েক হাজার বিঘা জমির তিল ও পাট এখন পানির নিচে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে চিনা বাদামের।অপরিপক্কতার কারণে এখনও বাদাম ঘরে তোলার উপযোগী না হওয়ায় বেশির ভাগ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। বাদাম চাষিরা এই অপরিপক্ক বাদাম পানির ভেতর থেকেই তোলার চেষ্টা করছেন। তবে অধিকাংশ বাদাম ক্ষেত পানির নিচে থাকায় তা এখন আর তোলার সুযোগ নেই। এতে চাষিদের কয়েক কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়েছেন। জেলার চন্দনী, খানগঞ্জ, মিজানপুর, বরাট, ছোটভাকলা, দেবগ্রাম, দৌলতদিয়া, রতনদিয়া ও উজানচরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চরাঞ্চলের জমির বাদাম এখন পানির নিচে তলিয়ে নষ্ট হচ্ছে। চন্দনী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বাদামচাষি আব্দুর রহিম, লোকমান হোসেন, সোবাহাস শেখসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা বলেন, তারা প্রতিবছরই চরের বেলে দোআশ মাটিতে বাদাম চাষ করেন। এই বাদামের উপরই তাদের সারা বছর চলে। তবে এবছর আগে পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে তাদের বাদামসহ সব ধরনের ফসল তলিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হলে এ ক্ষতি থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পাবেন বলে জানান। চন্দনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রব বলেন পদ্মার পানিতে তলিয়ে বাদামসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল নষ্ট হচ্ছে। চাষিদের এ ক্ষতি লাঘবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কৃষি প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে জোর দাবি জানাই। রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এস এম শহিদ নুর আকবর বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ায় পদ্মা সংলগ্ন উপজেলার ইউনয়নের ফসলি জমিগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চিনাবাদামসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল তলিয়ে গেছে। ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় পানির নিচ থেকেই বাদাম তোলার চেষ্টা করছেন। তবে বেশি ক্ষতির মধ্যে পড়েছে গোয়ালন্দের চারটি ইউনিয়নের নিচু এলাকা। পানি বাড়তে থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।