রাজধানীতে অহরহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এ শহরটিতে প্রতিদিনই বহু মানুষ ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে বাড্ডা, ভাটারা, মিরপুর ও পল্লবী এলাকায় বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এছাড়া শাহবাগ, মগবাজার, রমনা, মালিবাগ রেলগেট, চানখাঁরপুল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকা, গুলিস্তান, ধানমন্ডি, জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড, নিউমার্কেট, পান্থপথ মোড় ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায়ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। অনেকে আবার ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে প্রাণটাই হারান। যদিও ছিনতাই ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময়ই তৎপর, তারপরও তারা এটিকে নির্মূল করতে পারেনি।সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন যারা চুরি এবং ছিনতাই এর মত কাজ করে তাদের কাছে এটা একটা নেশা এবং পেশা। কারণ এদের বেশির ভাগই মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে। ফলে কোনটা অপরাধ আর কোনটা অপরাধ না সেটা তারা পার্থক্য করতে পারেন না। আবার ছিনতাইকারীদের উপরে প্রভাবশালী একটা মহল থাকে বলে মনে করেন সমাজবিজ্ঞানী এবং অপরাধ বিশ্লেষকরা। সমাজবিজ্ঞানী সামিনা লুৎফা বলেন, ‘ছিনতাইকারীরা নেশা দ্রব্য কেনার জন্য ছিনতাই করে থাকে। এরা দিনের বেলা ঘুমায়, যখনই সন্ধ্যা হয় তখনই এরা ছিনতাইয়ের জন্য নামে। আস্তে আস্তে তারা আরো বড় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।’ এদিকে ছিনতাইয়ের শিকার এড়াতে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ফারজানা রহমান খন্দকার।
১. হেল্পলাইনগুলো জানা থাকা
সচেতন নাগরিক হিসেবে পুলিশের হেল্পলাইনগুলো সবার জানা দরকার। এই নম্বর গুলো মোবাইলে ডায়াল লিস্টে রাখা উচিত। যদি আপনার সঙ্গে কোনো ঘটনায় ঘটে যায় তাহলে দ্রুত যাতে পুলিশকে জানাতে পারেন। এক্ষেত্রে পুলিশ ঘটনাস্থলে দ্রুত চলে আসতে পারবে। আরো কোনো দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা থাকলে সেটাও থামানো সম্ভব।
২. অনিরাপদ স্থান এড়িয়ে চলা
সন্ধ্যার পর অন্ধকার রাস্তা দিয়ে না গিয়ে আলো আছে এবং মানুষের চলাচল আছে এমন রাস্তা ব্যবহার করা। রাস্তার পরিবেশ খেয়াল করা উচিত। কোনো অস্বাভাবিক কিছু নজরে পরলে বা আঁচ করতে পারলে সে রাস্তা দিয়ে না যেয়ে অন্য রাস্তা ব্যবহার করুন। যদি সময় বেশি লাগে সেটা লাগুক, কারণ জীবনের নিরাপত্তা সবার আগে।
৩. এলাকা সম্পর্কে জ্ঞান রাখা
আপনি যতি অপরিচিত কোনো এলাকায় যেতে চান তার আগেই ঐ এলাকা সম্পর্কে ভালো করে খোঁজ-খবর নিয়ে নিন। সেখানে পরিচিত কেউ থাকলে সহয়তা নিন।
৪. সেলফ ডিফেন্স বা আত্মরক্ষার মূল কৌশলটা জানা উচিত
সবার সেলফ ডিফেন্স বা আত্মরক্ষার মূল কৌশলটা জানা উচিত বলে মনে করেন অপরাধ বিশ্লেষকরা। অনেক দেশে স্কুল পর্যায়ে আত্মরক্ষার বিভিন্ন কৌশল শিখানো হয়।
কারণ ছিনতাইয়ের কবলে পড়লে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, ফলে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে হয়ত ঐ বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যেত কিন্তু সেটা হয়ে উঠে না। এছাড়া ছিনতাই এর ঘটনা হলেই পুলিশের কাছে রির্পোট করতে হবে। কারণ একটা অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে সেটা যদি পুলিশের কাছে রিপোর্ট করা না হয় তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর কাছে এর কোনো রেকর্ড থাকে না। অনেকেই আছে মনে করেন ছিনতাই হয়ে গেছে এখন আর কি হবে কিন্তু যদি আপনার তেমন মূল্যবান কিছু না হারায় তার পরেও আপনি একজন নাগরিক হিসেবে কর্তব্য পুলিশের কাছে জানানো যে কোন এলাকায় ঘটনা ঘটেছে। তাহলে পুলিশ সে অনুযায়ী পরে ব্যবস্থা নিতে পারে।