গত মাসে রেকর্ড পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয় করেছে দেশটি। তাইওয়ানের অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, বার্ষিক ভিত্তিতে মে মাসে ছয় শতাংশ বেড়েছে রপ্তানি আয়। এর আগের মাসের তুলনায় ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে রপ্তানি আয়। এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান হুয়াং ইয়ু-লিং। চলতি বছর প্রথম পাঁচ মাসে দেশটির রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৪০ কোটি ডলারে, যা গত বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। গত মাসে সবচেয়ে বেশি ইলেকট্রনিকস পণ্য রপ্তানি করেছে তাইয়ান। এ সময় এক হাজার ৮৬০ কোটি ডলার মূল্যের ইলেকট্রনিকস পণ্য রপ্তানি করেছে দেশটি, যা বার্ষিক ভিত্তিতে মোট আয়ের ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে তথ্য ও যোগাযোগ পণ্যের রপ্তানি আয়ে বেড়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ বা এক হাজার ৩৯০ কোটি ডলার। এ খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে ফাইভজি-সম্পর্কিত নানা ধরনের অ্যাপ, উচ্চগতিসম্পন্ন কম্পিউটার ও গাড়ির ইলেকট্রনিক পণ্য প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে বিশেষ খ্যাতি রয়েছে তাইওয়ানের। গত মাসে দেশটির অপ্টোইলেকট্রনিকস উৎপাদকরা ১৮০ কোটি ডলার আয় করে। তবে গত বছরের তুলনায় এ পণ্যের রপ্তানিতে আয় কমেছে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চীন ও হংকং থেকে টেলিভিশন ও নোটবুকের মতো পণ্যের রপ্তানি আদেশ কম আসায় এ খাত থেকে প্রত্যাশিত আয় করা যায়নি। তবে ইস্পাত থেকে আয় কমেছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এ সময় এ খাত থেকে আয় হয়েছে মাত্র ৩০০ কোটি ডলার। আয় কমেছে প্লাস্টিক খাত থেকেওÑ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য রপ্তানি করে ২৪০ কোটি ডলার আয় করেছে তাইওয়ান। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লেও এ খাতে প্রায় ১৪ শতাংশ আয় বেড়েছে দেশটির। মে মাসে তাইওয়ানের পণ্যের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এক হাজার ৬৯০ কোটি ডলারের পণ্য কেনে তাইওয়ান থেকে। এ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বার্ষিক ভিত্তিতে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ রপ্তানি বেড়েছে। এর পরে বেশি পণ্য রপ্তানি করেছে চীন ও হংকংয়ে। দেশ দুটিতে যথাক্রমে এক হাজার ২৩০ কোটি ও এক হাজার ৩৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে তাইওয়ান। গত মাসে ইউরোপের দেশগুলোয় তাইওয়ানের রপ্তানি আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। এ সময় মোট রপ্তানি আয় করেছে এক হাজার ৪০ কোটি ডলার। আসিয়ান দেশগুলোয় রপ্তানি বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এ অঞ্চলে তাইওয়ানের রপ্তানি আয় হয়েছে ৬৯০ কোটি ডলার। তবে জাপানে বার্ষিক ভিত্তিতে তাদের পণ্যের রপ্তানি আয় কমেছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। এ সময় ২৭০ কোটি ডলার আয় হয়েছে জাপান থেকে। অর্থ মন্ত্রণালয় উদীয়মান প্রযুক্তিপণ্যের রপ্তানি আরও বাড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী। চলতি মাসে পাঁচ হাজার ৫৫০ কোটি থেকে পাঁচ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার প্রযুক্তিপণ্য রপ্তানির পূর্বাভাস দিয়েছে মন্ত্রণালয়। চীনের শূন্য কভিড নীতির কারণে তাইওয়ানের সরবরাহব্যবস্থাও ধীরগতি হয়ে পড়ে। তবে ধীরে ধীরে বিধিনিষেধ তুলে নেয়ায় প্রযুক্তিপণ্যের চাহিদা বাড়ছে বলে জানান হুয়াং ইয়ু-লিং। অর্থাৎ চীন থেকে রপ্তানি আদেশ আরও বাড়তে পারে। এর মধ্য দিয়ে চীনের সঙ্গে গত দুই বছরের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে তাইওয়ান। হুয়াং বলেন, মে মাসে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে তাইওয়ানের রপ্তানি। বিশেষ করে ধারণক্ষমতা বেড়ে যাওয়া এবং লজিস্টিক ও মূল উপকরণগুলোর সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানি আয় বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আয় করেছি মে মাসে।