পৃথিবীতে এমন একটা দ্বীপ আছে, যেখানে পুরুষ প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষেধ। যেতে পারবে শুধু নারীরা। নান্দনিক এই দ্বীপটি তৈরি করা হয়েছে ফিনল্যান্ডে। নাম দেয়া হয়েছে সুপারসি। ক্রিশ্চিয়ানা রোথ নামে এক মার্কিন তরুণী দ্বীপটি খুঁজে পেয়েছিলেন ফিনল্যান্ডের সমুদ্র উপকূলে। আর দ্বীপটির প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। ক্রিশ্চিয়ানা মনে মনে পরিকল্পনা করেছিলেন, বাল্টিক সাগরের সবুজ নীল পানির উপর জেগে থাকা একটুকরো এই ভূখণ্ডটি শুধু নারীদের জন্য তৈরি করবেন। ভাবা মাত্রই কাজ। সবুজে ঘেরা ছোট্ট এই দ্বীপটিতে তিনি তৈরি করেন একটি রিসোর্ট। যেখানে থাকার অধিকার পাবেন শুধু মেয়েরাই। একেবারে স্বাধীন আর মুক্ত মনে ঘুরে বেড়াতে পারবেন তারা। এই রিসোর্টের নামে ক্রিশ্চিয়ানা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি কমিউনিটিও তৈরি করেন। তার নাম দেন ‘সুপারসি কমিউনিটি’। ক্রিশ্চিয়ানা জানিয়েছেন, সবসময় পুরুষ সঙ্গীকে নিয়েই বেড়াতে যেতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতায় তিনি বিশ্বাসী নন। নিরাপত্তার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েরা পুরুষদের সঙ্গে বেড়াতে যান। এমন পরিস্থিতিতে মেয়েদের মুক্ত করেই এই ‘সুপারসি দ্বীপের ভাবনাচিন্তা তার মাথায় এসেছে বলে জানান তিনি। ক্রিশ্চিয়ানা আরও বলেন, সুপারসি মেয়েদের মনের বিভিন্ন ইচ্ছা পূরণের সুযোগ করে দেবে। এখানে মেয়েরা যত খুশি আনন্দ, হৈ হুল্লোড় করতে পারবেন। কেউ তাদের বাধা দেবে না। কেউ নজরদারিও চালাবে না। সুপারসি’র রিসোর্টে মোট চারটি কেবিন আছে। সেখানে প্রত্যেকটি কেবিনে ১০ জন নারী থাকতে পারবেন। ফিনল্যান্ডের দক্ষিণের হেলসিঙ্কি শহর থেকে মাত্র ৯০ মিনিটের দূরত্বের দ্বীপটিতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনাকে বুকিং দিতে হবে। তবে পদ্ধতিটা একটু আলাদা। সেখানে থাকার জন্য আপনাকে প্রথমে সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। সে জন্য প্রথমেই দিতে হবে একটি পরীক্ষা। তবে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। আসলে পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান, গণিত বা কঠিন কোনো বিষয়বস্তুর থাকবে না। শুধু নির্দিষ্ট একটি দিনে দ্বীপটির মালিকানায় থাকা ক্রিস্টিনার সঙ্গে ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপ স্কাইপে ইন্টারভিউ দিতে হবে। এছাড়া আপনাকে হয়তো ‘সোহো হাউস’ নামক একটি মিডিয়া ক্লাবের মেম্বার হতে হবে কিংবা ক্লাবের কোন সদস্য থেকে সুপারিশ নিতে হবে। আপনি যদি ভ্রমণের জন্য নির্বাচিত হন তাহলে এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। তবে পুরুষবিহীন দ্বীপটিতে ভ্রমণ মোটেও সহজলভ্য নয়। এজন্য আপনাকে গুণতে হবে তিন হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ৩ লাখ টাকা)। সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রিস্টিনা বলেন, আমি চাই না দ্বীপটিকে ‘অভিজাত’ হিসেবে দেখা হোক। এখন পর্যন্ত দ্বীপটিতে রোথ বান্ধবীরাই প্রথম ভ্রমণ করেছেন। তবে চলতি বছরের গ্রীষ্মকালের শুরুর দিকেই স্থানটি উন্মুক্ত করে দেয়া হবে সাধারণের জন্য। উল্লেখ্য, জাপানে এমন একটি দ্বীপ আছে যেখানে শুধু পুরুষরাই যেতে পারেন। এবার তার বিপরীতে ক্রিশ্চিয়ানা রোথ এ দ্বীপটি তৈরি করলেন।