স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ জুনের শেষ সপ্তাহে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে সেতু এর কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখী মানুষের যাতায়াত আরও আনন্দদায়ক হবে।
সরকার ও সেতু বিভাগের সূত্র পদ্মা সেতু চালুর বিষয়ে এমন তথ্য জানালেও সেতু চালুর ব্যপারে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো তারিখ ঠিক করা হয়নি বলছেন তারা । তবে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ২৩ জুন সেতুটি চালুর কথা শোনা যাচ্ছে পদ্মা সেতু প্রকল্প অগ্রগতির প্রতিবেদন বলছে, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। বাকি সাড়ে তিন শতাংশ কাজের মধ্যে রয়েছে নিচ দিয়ে গ্যাসের পাইপলাইন বসানো, রেলপথের পাশে হাঁটার রাস্তা তৈরি। যানবাহন চলাচল করার জন্য দরকারি কাজ হচ্ছে পিচঢালাই ও সড়কবাতি বসানো। পাশাপাশি সড়কের সাইন–সংকেত ও মার্কিং বসাতে হবে। এদিকে বাকি থাকছে নদীশাসনের কাজ। বলা যায় এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে পুরো প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৯১ শতাংশ। তবে সূত্র বলছে, আর্কিটেকচারাল লাইটিং এবং নদীশাসনের বাকি কাজের জন্য যানবাহন চালু করতে কোনো বাধা নেই। তাই যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে পদ্মা সেতু।
পদ্মা সেতুর মসৃণ-সাজসজ্জার কাজ ছাড়া এখন আর কোনো জটিল কাজ বাকি নেই। সেতুর বাকি সাজসজ্জার কাজ ২৩ মের মধ্যে শেষ হতে পারে বলছেন ঠিকাদারেরা। আর মার্চে পিচঢালাই শেষ হবে। তাই জুনে খুলে দেওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা যায়, সেতুতে পিচঢালাইয়ের কাজ অর্ধেক সম্পন্ন হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই পিচঢালাইয়ের কাজ প্রায় শেষ হয়ে যাবে। সেতুতে প্রথম পানিনিরোধক একটা পাতলা স্তর বা ওয়াটার মেমব্রেন বসানো হয়েছে। এর ওপর দুই স্তরের ১০০ মিলিমিটার পুরো পিচঢালাই হচ্ছে। পিচঢালাই শেষ হলে সেতুতে সাইন–সংকেত এবং মার্কিংয়ের কাজ শুরু হবে। সেতুতে ৭১৫টি সড়কবাতি (ল্যাম্পপোস্ট) বসানো হবে। এর মধ্যে ১০০টি বসেছে। মে মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে।
এর বাইরে সেতুর নিচ দিয়ে মনোরেল বসানো হচ্ছে। নিচের অংশে মেরামত দরকার হলে এই মনোরেলের মাধ্যমে চলাচল করতে পারবেন কর্মীরা। আর সেতুর ওপরের ও পাশে মেরামতের জন্য গ্যান্ট্রি ইতিমধ্যে এসেছে। এ ছাড়া সেতুতে ভূমিকম্প প্রতিরোধক বিয়ারিংও লাগানো হয়েছে। সেতুতে স্থাপন করা এসব বিয়ারিং প্রায় ৮ মাত্রার ভূমিকম্পেও সেতুটিকে টিকিয়ে রাখতে পারবে। ২০০৭ সালে একনেকে পাস হওয়া পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। ২০১১ সালে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় দফা সংশোধনের পর ব্যয় দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। বর্তমানে কয়েক দফা সময় বৃদ্ধির পর এখন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। প্রকল্প শেষ হওয়ার আগে আরেক দফা প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করতে হবে।