ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’র আওতায় ১২ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ২০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। সেচনির্ভর কৃষি খাত এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা ১ লাখ ৭০ হাজার দরিদ্র মানুষের আয় বাড়াতে সহায়তা দেবে সংস্থাটি। বিবৃতিতে বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, এই ঋণের মূল লক্ষ্য হবে- সেচ নির্ভর কৃষি খাত ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা বিপুল জনগোষ্ঠীর আয় বাড়ানো। বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর দানদান চেইন ওই বিবৃতি খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অর্জনের কথা উল্লেখ করে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘কৃষিখাতে বাংলাদেশের সফলতার শেকড় অনেক গভীরে। বড় একটি জনসংখ্যা এবং আবাদি জমির স্বল্পতার মধ্যে দেশটির খাদ্য উৎপাদন এমন মাত্রায় রয়েছে, যা বড় একটি অর্জন। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাওয়ার কারণে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়েছে।’
বিবৃতিতে বিশ্ব ব্যাংকের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘প্রকল্পটি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উন্নত বন্যা ব্যবস্থাপনা, সেচ এবং নালা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খাদ্যশস্য এবং মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা দিয়ে বাংলাদেশকে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে সহায়তা করবে। এ ক্ষেত্রে বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি ও বর্ষা পরবর্তী সময়ে পানি স্বল্পতা নিয়ন্ত্রণে প্রকল্পটিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। এতে আরো বলা হয়, প্রকল্পটির মাধ্যমে দরিদ্র ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা সমূহে ১৯টি বন্যা ব্যবস্থাপনা ছাড়াও সেচ ও নিষ্কাশন পরিকল্পনাকে আবারো সচল করা হবে। সেই সঙ্গে ক্লাইমেট-স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি, ফসলের বৈচিত্র্য ও ফসল তোলার পর সে সবের ব্যবস্থাপনা নিয়ে এক লাখ কৃষককে প্রশিক্ষণও দেয়া হবে। পাশাপাশি ধান, মাছ ও চিংড়ি চাষ ছাড়াও সংরক্ষণের জন্য হিমাগার তৈরি করা হবে এবং স্থানীয় বাজারের উন্নয়নের চেষ্টা করা হবে প্রকল্পটির মাধ্যমে। ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চেন এতে সই করেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৮২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের ঋণ এক হাজার ২০ কোটি টাকা। বাকি ১৬২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা সরকারি নিজস্ব তহবিল থেকে মেটানো হবে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও মৎস্য অধিদফতর।
পুরো ঋণের ওপর ০ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ (রেয়াতকাল) ৩৫ বৎসরে ঋণটি পরিশোধযোগ্য।