হায়দার হোসেন, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের রেকর্ডভুক্ত ভ‚মি নড়াইল জেলায় অন্তর্ভ‚ক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে গ্রামবাসী।সদর উপজেলার চর সরসপুর, গোপালপুর ও চরপুকুরিয়া গ্রামবাসী এ কর্মস‚চী পালন করে।
আজ সোমবার সকাল ৯ টায় গোপালপুর খেয়াঘাট সড়কের উপর দাঁড়িয়ে হাতে হাত ধরে গ্রামবাসী ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মস‚চী পালন করে।এসময় গোপালগঞ্জের রেকর্ডভুক্ত ভ‚মি নড়াইল জেলায় অন্তর্ভ‚ক্তি করার প্রতিবাদে বিভিন্ন ধরনের লেখা প্লাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।
মানববন্ধনে তিন গ্রামের পাঁচ শতাধিক নারী পুরুষ অংশ নেন। মানববন্ধন চলাকালে উরফি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির গাজী, অ্যাভোকেট আজিজুর রহমান, ওমর আলী বিশ্বাস, খোরশেদ মিয়াসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে অংশ নিতে আসা সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের ওমর আলী বিশ্বাস বলেন, গোপালগঞ্জ জেলায় আমাদের বসত বাড়ী। আমাদের প‚র্বপুরুষেরা যুগযুগ ধরে এখানে বসবাস করে আসছি। এখান থেকে গোপালগঞ্জ শহর কয়েক কিলোমিটার দ‚র। কিন্তু নড়াইল জেলা শহর প্রায় ৬০ কিলোমিটার দুরে। নড়াইল জেলার মানুষদের সাথে আমাদের কোন ধরনের যোগাযোগ নেই। আমাদের দাবী আমরা গোপালগঞ্জ জেলার অধিবাসী ছিলাম, আছি এবং থাকবো।
একই গ্রামের বাসিন্দা খোরশেদ মিয়া বলেন, কয়েক প‚র্বপুরুষ ধরে আমরা গোপালগঞ্জ জেলায় বসবাস করে আসছি। কিন্তু, তিন গ্রামের মধুমতি নদীর তীরবর্তী কয়েক হাজার পরিবার ও ভ‚মি নড়াইল জেলার মধ্যে অন্তর্ভ‚ক্তি করার ষড়যন্ত্র চলছে। এতে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের আংশকা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা নড়াইল জেলা নয় বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান গোপালগঞ্জে থাকতে চাই বলে দাবী করেন হাজার হাজার গ্রামবাসী।
গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা অ্যাভোকেট আজিজুর রহমান বলেন, আমরা প্রায় দেড়শ বছর যাবত গোপালগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমার দাদা ও বাবার কবর এখানে। সিএস রেকর্ড, আরএস রেকর্ড, বিআরএস রেকর্ড, এসএ রেকর্ড-এ আমাদেরকে গোপালগঞ্জে অন্তর্ভ‚ক্ত করে রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু আন্ত:জেলা সীমানা নির্ধারনের নামে নড়াইল ও গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমরা তা অবগত নই। গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীর তীরবর্তী অংশ কেটে নড়াইল জেলায় অর্ন্তভ‚ক্তি করার চেষ্ঠা চলছে। আমরা নড়াইল জেলায় যেতে চাই না। আমরা পৃথিবীর বুকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা হয়ে থাকতে চাই।
উরফি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির গাজী বলেন, তিন গ্রামের মানুষ কোনভাবেই গোপালগঞ্জ জেলা থেকে নড়াইল জেলায় যেতে চান না। এখানকার মানুষ নিরীহ ও ওপারের মানুষ খুব দ‚র্র্ধ্বষ। গোপালগঞ্জ জেলার ভুমি যদি নড়াইল জেলায় রেকর্ড হয় তাহলে এ জেলার মানুষ অন্যায় অত্যাচারে ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং সংঘাত বাঁধার সম্ভবনা রয়েছে। আমরা জোরালো ভাবে আবেদন করছি এই তিন গ্রামের মানুষ কোনভাবেই নড়াইল জেলার অন্তর্ভুক্তি হতে চায় না। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, যেখানে দুই জেলার সিমানা নিয়ে কথা, সেখানে কোন জেলাই ইচ্ছা করলে অন্য জেলার সম্পত্তি নিয়ে নিতে পারেনা। তিনি বিষয়টি এখনই খতিয়ে দেখার জন্য জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খোঁজ খবর নেয়ার নির্দেশ দেন।