বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অল্প সময়ের মধ্যেই লোডশেডিং সংকট থেকে উত্তরণ হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে সরকারের পতন হবে- বিএনপি নেতাদের এমন রঙিন খোয়াব অচিরেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।’মঙ্গলবার নিজ বাসভবনে ব্রিফিংকালে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে এ মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি নেতাদের মন্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি কোন মুখে বড় কথা বলে? তাদের কি বিন্দুমাত্র লাজ-শরম নেই? যারা দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছিল, যাদের শাসনামলে দিনের পর দিন অর্ধেক সময় লোডশেডিং চলতো, শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, তারা আজ বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে।’ বিএনপি নেতাদের স্মরণ করে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনগণ বিদ্যুৎ সংযোগহীন খাম্বা দুর্নীতির কথা এখনো ভুলে যায়নি। ভুলে যায়নি বিদ্যুতের দাবিতে মিছিলে গুলির কথা, হারিকেন-কুপি নিয়ে বিক্ষোভ এবং বিদ্যুৎ ভবন ঘেরাও করার কথা। বিএনপি আমলে জনগণ বিদ্যুৎ পায়নি, পেয়েছিল খাম্বা। করোনার কারণে সারা পৃথিবীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়েছে, বাংলাদেশও করোনার করাল গ্রাসের সঙ্গে সংগ্রাম করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে নিজেদের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সাম্প্রতিককালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর আন্তর্জাতিক পরিণতি বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আবারও কিছুটা হুমকির মুখে ফেলেছে। যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি মার্কেট চরম অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে, এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি যাতে বড় কোনো ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সে লক্ষ্যে সরকারকে আগেভাগেই কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘জাপানের মতো উন্নত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশও তাদের সাড়ে তিন কোটির বেশি মানুষকে নিয়মিত বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে পারছে না। একই অবস্থা অস্ট্রেলিয়ারও। তাই সবাইকে এই সংকটকালীন সময়ে রেশনিং করতে হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে, উন্নত রাষ্ট্র আমেরিকাতেও এসএমএস এর মাধ্যমে জনগণকে এনার্জির ব্যবহার লিমিট করতে বলা হয়েছে।’ ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ১৩০০-১৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন, সেখানে শিল্প ও কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে দেওয়া সম্ভব হবে।’ দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানকে চাঙা রাখার লক্ষ্যে সরকার শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করছে’ উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী পরিবর্তিত সংকটময় পরিস্থিতিতে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় সরকার ও জনগণের সাধ্যের মধ্যে রাখার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে এবং রেশনিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’ দেশ ও জনগণের কল্যাণে সরকারের গৃহীত এবং গৃহীতব্য ব্যবস্থার সঙ্গে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। জনগণের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাময়িক এ অসুবিধায় ধৈর্য ধারণ এবং সহযোগিতা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেন তার ওপর অতীতে যেমন আস্থা রেখেছেন, এখনও রাখুন। কারো কথায় কান দেবেন না। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অল্প সময়ের মধ্যেই এ সংকট থেকে উত্তরণ হবে।’