চলমান বিদ্যুৎ সংকটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনই সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করা যায় কি না, তা সরকারের ভাবনায় আছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন করা যায় কি না, সেটা আমরা ভাবছি।’ গতকাল ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির সম্মেলন ও শোক দিবসের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। বর্তমানে অনেক স্কুল ও কলেজে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া বাকি ছয় দিন পাঠদান হয়। আবার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিক থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই দিন করে সপ্তাহিক ছুটি থাকবে বলে গত ফেব্রুয়ারিতে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। গতকাল তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত আমি ঠিক বলতে পারছি না। তবে আমরা এটা নিয়ে ভাবছি। হয়তো শিগগিরই যে সিদ্ধান্ত হবে, তা জানিয়ে দেয়া হবে।’ বিশ্বে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ডলার বাঁচাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। তাতে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়ায় সরকারকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দিতে হচ্ছে দিনে কয়েক ঘণ্টা করে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সবশেষ বৃহস্পতিবার শিল্প-কারখানায় একেক দিন একেক এলাকায় ছুটির ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তাতে দিনে ৪৯০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা। সরকারের এসব সিদ্ধান্তের জন্য নানা সমালোচনাও চলছে। সবসময় সব সিদ্ধান্ত জনপ্রিয় হয় না বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি বলেন, ‘প্রয়োজন সঠিক সিদ্ধান্তের। শেখ হাসিনা সেই কাজটিই করছেন। আজকে কৃচ্ছ্রসাধন করবেন, আগামী এক বছরের মধ্যে যে ধাক্কাগুলো আসছে অর্থনীতির ওপরে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে, সেগুলোকে আমরা সামলে উঠতে পারব। যদি এখন কঠিন সিদ্ধান্ত না নেয়া হয়Ñএক বছর-দেড় বছর পর নির্বাচন, সবাইকে খুশি করার নীতি নেয়া হয়, তাহলে এ ধাক্কা সামলাতে পারবে না আমাদের অর্থনীতি।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সাশ্রয়ী হতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি বাড়ছে কি না, আমরা তা চিন্তাভাবনা করছি। আগামী বছর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি সপ্তাহে দুদিন হবে। এখন থেকেই সেদিকে যাব কি না ভাবছি। আবার দুই বছর করোনার কারণে পাঠদান করতে পারিনি। তবে আমরা গবেষণা করেছি। ফলাফল বলছে, আমাদের শিক্ষার্থীদের ঘাটতি ঘটেনি। তাদের জন্য এটা শাপেবর হয়েছে। তাদের স্ব-শিখনের দক্ষতা তৈরি হয়েছে। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন।’ মহামারির কারণে শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়েনি বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ড্রপ আউট, ড্রপ আউট করে সবাই মাথা খারাপ করে দিয়েছিল। কিন্তু কোনো ড্রপ আউট হয়নি।’