ঈদের আনন্দ থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হয় সে লক্ষ্যে দেশের বিত্তবান ও স্বচ্ছল ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রবিবার বঙ্গভবনে ঈদের নামাজ পরবর্তী জাতির উদ্দেশে দেয়া এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি। রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা মোকাবিলায় বন্যাদুর্গত, অস্বচ্ছল ও নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে চলমান বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রমে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়েও উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন “সব সংকট মোকাবিলা করে নতুন সম্ভাবনায় এগিয়ে যেতে দরকার সম্মিলিত প্রয়াস- বিশেষ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে।” বৈশ্বিক নানামুখী সংকটের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিগত দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এর সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট। এসব যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি চাপের মুখে পড়েছে, বেড়েছে মূল্যস্ফীতির চাপ। আবদুল হামিদ বলেন, সরকার এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বিভিন্ন প্যাকেজ প্রণোদনা প্রদানসহ বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। কৃষি ও শিল্পসহ উৎপাদনশীল প্রতিটি খাতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতেও সরকার সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে’— আবদুল হামিদ উল্লেখ করেন। গৌরবের নিদর্শন পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারের ঈদের আগেই দেশবাসীর কাছে মহাখুশির উপলক্ষ্য হয়ে এসেছে এই সেতুর উদ্বোধন। যার মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার তিন কোটি মানুষের বহুমুখী যোগাযোগের অপার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, আগামী বছর সেতুতে রেল সংযোগ স্থাপিত হলে দেশের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ হবে। তিনি দেশবাসীসহ বিশ্বের সব মুসলিমদেরকে পবিত্র ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান। মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র কুরবানী ত্যাগের শিক্ষা আমাদের ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলিত হলেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি ও সৌহার্দ্য, রাষ্ট্রপতি মনে করেন। তিনি সবাইকে পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মার্থ অনুধাবন করে সমাজে শান্তি ও কল্যাণের পথ রচনা করতে সবাইকে সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হওয়ার পরামর্শ দেন। রাষ্ট্রপতি হামিদ আশা করেন যে সবাই সরকার নির্ধারিত স্থানে কুরবানি সম্পন্ন করে যথাসময়ে কুরবানির বর্জ্য অপসারণে সচেষ্ট থাকবেন।