অনেক সময় কারও চুলের স্টাইল দেখে বেশ পছন্দ হলো, নিজেও সেই ধরনের কাট দিলেন। কিন্তু দেখা গেল আপনাকে মানাচ্ছে না। এরকম ঘটনা অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হতে পারে মুখের আকৃতি। চুল কাটার ক্ষেত্রে আমরা অনেকেই এ বিষয়টা বিবেচনায় নেই না। যার ফলে সুন্দর একটি কাট দেওয়ার পরও চুলের স্টাইল মনের মতো হয় না বা ঠিকমতো মানায় না।
কোন ধরনের মুখের আকৃতির জন্য কোন চুলের কাট মানানসই, সেটি জানার আগে আমাদের মুখের সাধারণ আকৃতিগুলো জেনে নিতে হবে। মুখের আকৃতির সাধারণত গোলাকার, বর্গাকার, আয়তাকার, ডিম্বাকার, ত্রিভুজাকৃতি ও ডায়মন্ড আকৃতির হয়ে থাকে। আকৃতি নির্ণয়ের একটি সহজ কৌশল হলো, সাবান বা সহজে ধুয়ে ফেলা যায় এমন কিছু দিয়ে আয়নায় ওপর মুখের একটি আকৃতি আঁকা। কোন আকৃতির মুখের জন্য কোন ধরনের চুলের স্টাইল মানানসই সে বিষয়ে আজ আলোচনা করবো। তবে এই নির্দেশিকাকে একেবারে আবশ্যিক ধরে নেওয়া যাবে না। কেন না, মুখের আকৃতির মধ্যে বেশ রকমফের লক্ষণীয়, এটি শুধু একটি সাধারণ নির্দেশিকা।
গোলাকার
যেহেতু বৃত্তাকার মুখগুলোতে রেখা বা ডিটেইলস কম থাকে। তাই চুলে প্রচুর ডিটেইলস দিলে মানানসই দেখায়। গোলাকার মুখের পুরুষদের জন্য চুলের স্টাইল খুঁজে বের করা প্রথমে কঠিন মনে হতে পারে। তবে এটি অবশ্যই অসম্ভব নয়। এখানে চুলের গঠন এবং ঘনত্বকে যতটা সম্ভব জোর দিতে হবে। এর জন্য একটি পম্পাডুর ধরনের চুলের স্টাইল খুবই কার্যকর হতে পারে। গোলাকার আকৃতির মুখের আরেকটি সমস্যা ক্লিন শেভড অবস্থায় শিশুসুলভ দেখানো। তাই এ ক্ষেত্রে একটি বর্গাকার ধরনের দাড়ি দিয়ে সেটি দূর করতে পারেন।
বর্গাকার
বর্গাকার হলো একটি বহুমুখী মুখের আকৃতি। কেন না এ আকৃতিতে অনেক ধরনের চুলের স্টাইল মানিয়ে যেতে পারে। বর্গাকার মুখের পুরুষদের চুল মোটামুটি ছোট এবং পরিচ্ছন্ন টাইপের রাখলে মুখের সঙ্গে মানানসই দেখায়। বর্গাকার আকৃতির মুখে দাড়ি রাখতে হলে খুবই ছোট অথবা মোটামুটি লম্বা রাখা ভালো।
আয়তাকার
এ ক্ষেত্রে যেহেতু মুখ কিছুটা লম্বা, তাই একটি ভারসাম্যপূর্ণ চুলের স্টাইল সন্ধান করুন। যা চুলের সঙ্গে মুখের আকৃতির একটি অভিন্ন ভাব দেবে। উপরের দিকে লম্বা চুল এবং চারপাশে চুলের দৈর্ঘ্য ছোট থাকে এমন ধরনের চুলের কাট নির্বাচন করা যেতে পারে।
ডিম্বাকার
ডিম্বাকৃতির মুখকে ভালো আনুপাতিক আকৃতির মুখ হিসেবে ধরা হয়। ডিম্বাকৃতি মুখের পুরুষরা বহুসংখ্যক চুলের স্টাইল ব্যবহার করতে পারেন। তবে ডিম্বাকৃতি মুখের পুরুষদের সাধারণত যতটা সম্ভব কপালের চুল ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় এবং এলোমেলো ঝালর জাতীয় চুল কাটা এড়িয়ে চলতে বলা হয়। সর্বাধিক ঘনত্ব রাখার জন্যে কপালের ওপরদিকে আঁচড়ে-তুলে যেকোনো একপাশে চুলের গোছা তৈরি করুন। এ ছাড়া ডিম্বাকৃতি মুখের সঙ্গে সমান আকারের একবারে ছোটো বা কামানো মাথাও বেশ ভালো মানানসই।
ত্রিভুজাকৃতি
ত্রিভুজাকার আকৃতির মুখের অর্থ হলো, একটি চওড়া চোয়াল এবং সরু কপাল। তাই এ ক্ষেত্রে উপরে ও নিচের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য উপরে বেশি ভলিউম বা পুরু করে চুল রেখে তা করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চুল মোটামোটি বড় রেখে যেন ঘন দেখায় এ ধরনের প্রবাহমান স্বাচ্ছন্দ ধরনের স্টাইল বেঁছে নেওয়া মানানসই। তবে শক্ত ধরনের চোয়ালের জন্য চুল খুব বেশি বড় না করে ছোট করে কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়। যেহেতু ত্রিভুজ আকৃতির মুখের ক্ষেত্রে চোয়াল বেশ বড় হয়। তাই উপরে নিচের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে বলা হয় যে ত্রিভুজ আকৃতির মুখে দাড়ি সাধারণত খাপ খায় না। এ ক্ষেত্রে খুব হালকা ধরনের দাড়ি বা ক্লিন শেভ বেছে নেওয়াই বেশি মানানসই।
ডায়মন্ড আকৃতি
একটি ডায়মন্ড আকৃতির মুখের সঙ্গে ব্যাংগস বা চুলের স্ট্র্যান্ড যা বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের হতে পারে, কপালের উপরে পড়ে ঢেকে দেয়। সাধারণত ভ্রুর ঠিক উপরে, এ ধরনের চুল খুব ভালো যায়। এ ক্ষেত্রে লম্বা এবং কানের দুই পাশে অগোছালোভাবে ছড়িয়ে থাকা চুল সরু মুখের পুরুষদের ক্ষেত্রে সুন্দর টেক্সচার যোগ করে। যেহেতু ডায়মন্ড আকৃতির মুখ বেশ সূচালো ধরনের, তাই এখানে মূল বিষয় হলো চুলগুলোকে তুলনামূলকভাবে লম্বা এবং লেয়ারড করে রাখা। যেন মুখে সামগ্রিক সূচালো ভাব কমে। তাই খেয়াল রাখতে হবে, চুল ছড়িয়ে থাকলে ঢেউগুলোর কোণগুলোও যেন তীক্ষ্ণ বা সুচালো না হয়।
তাই চুল কাটার আগে, এই সূক্ষ্ম দিকটি খেয়াল রেখে কাট দিলে হয়তো পেয়ে যেতে পারেন আপনার সঙ্গে মানানসই চুলের স্টাইল।