সারা দেশে বন্যা পরিস্থিতির কারণে আগামী ১৯ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর বিবেচনা করে পরীক্ষার সময়সূচি পরবর্তীতে জানানো হবে। শুক্রবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আগামী ১৯ জুন অনুষ্ঠিতব্য সকল শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি জেনারেল, এসএসসি ভোকেশনাল এবং দাখিল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরীক্ষার পরিবর্তিত সময়সূচি পরে জানানো হবে। ১৯ জুন বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়ার কথা ছিল এবারের এসএসসি পরীক্ষা। রুটিন অনুযায়ী তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলার কথা ছিল ৬ জুলাই পর্যন্ত। ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি উপজেলা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এই দুই জেলার অধিকাংশ রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ডুবেছে পানিতে। সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের গোবিন্দগঞ্জ-দিঘলী এলাকা প্লাবিত হয়ে সারাদেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আন্তঃজেলা যোগাযোগ ব্যবস্থাও। এরইমধ্যে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষার পরীক্ষাকেন্দ্রও ডুবে গেছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের সুযোগও নেই বললে চলে। এ অবস্থায় শুক্রবার সিলেটের বানভাসি মানুষকে উদ্ধারে কাজ শুরু করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এছাড়াও ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করায় জেলা সদর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারীসহ চিলমারী উপজেলার শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। শুক্রবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানিও বাড়ছে। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নদ-নদীর পানি বেড়েছে নেত্রকোণাতেও। ফলে সেখানে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার কলমাকান্দা উপজেলার প্রধান নদী উব্দাখালীর পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে দেশের আরও অনেক জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা এলো।