মনির খাঁন কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার কংশনগর পূর্বপাড়া এলাকার সুলতান মিয়ার প্রবাসী দুই ছেলে সৌদি আরব থেকে জসিম ও দুলাল দীর্ঘদিন পরদেশে আসছিলেন। তাই বৃহস্পতিবার ১৯ মে ভোরে বাড়ি থেকে মাইক্রোবাসে সুলতান মিয়া তার স্ত্রী ও পরিবারের ৬জন সহ মোট ৮জন এয়ারপোর্টে তাদের আনতে যাচ্ছিলো। সকাল আনুমানিক ৭টায় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া এলাকায় পৌছুলে একটি হোটেলের সামনে গাড়িটি রাস্তার পাশে দাড় করিয়ে চালক ও সুলতান সহ তিন যাত্রী বাথরুমের কাজ সারতে নামেন। অনেকদিন পর ছেলেদের একনজর দেখার জন্য অধির আগ্রহ নিয়ে গাড়িতে বসে ছিলেন সুলতানের স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন সহ দুই প্রবাসী ছেলের নাতি নাতনিরা।
ছেলেদের মুখ আর দেখা হলো না আম্বিয়া খাতুনের। হঠাৎ করে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বড় কনস্ট্রাকশন ভ্যান মাইক্রোবাসটিকে সজোরে ধাক্কা দিলে মুহুর্তেই দুমড়ে মুচড়ে যায় গাড়িটি। গাড়ি থেকে নেমে যাওয়া চালক ও অন্যান্য যাত্রিরা অক্ষত থাকলেও গাড়ির ভেতরে থাকা একই পরিবারের প্রবাসী জসীম ও দুলালের মা আম্বিয়া খাতুন (৬০) দুলালের ছেলে সবুজ (১৮), মেয়ে রিয়া (৯) ভাগ্নে ওলি আহাম্মদে (১৮), ভাতিজা ওমর ফারুক (২১) ও জসিমের বন্ধু মোর্শেদ (৩০) গুরুতর আহত হয়।
স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আম্বিয়া খাতুন কে মৃত ঘোষণা করেন। আশংকাজনক অবস্থায় অন্যান্যদের প্রেরণ করা হয় ঢাকায়। আহতদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানায় নিহতের স্বজনরা।
দুপুরে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকাহত পরিবারে আহাজারি চলছে। নিহতের বড় মেয়ে ও স্বজনদের বরাত দিয়ে জানা যায়, গজারিয়া থানা এলাকার কুতুবদিয়া হোটেলের পাশে বাথরুমের যাওয়ার জন্য ড্রাইভার গাড়ি সাইট করে ড্রাইভার সহ ৩ যাত্রী নামার পরপরই একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ভেতরে থাকা ৫ যাত্রী সহ দুমড়েমুচড়ে যায় মাইক্রোবাসটি। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আম্বিয়া খাতুনের। আহতদের মাঝে তিনজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানায় তারা। আহতরা ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা আরো জানায়, প্রবাসী দুই ভাই জসিম ও দুলাল বাংলাদেশে বিমানবন্দরে অবতারণ করার কথা সকাল ৯টায়। সকলে হতাহতের নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তাদের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান তারা। দুই প্রবাসীর দেশে আসার আনন্দে পরিবারে হাসিখুশির বদলে আকস্মিক সড়ক দুর্ঘটনায় পুরো পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
হতাহতের স্বজন ও এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে দুর্ঘটনা বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচারের দাবী জানিয়েছেন।