স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্পের জনবল ছিলো মাত্র ৯৫ জন। কিন্তু তাদের সাথে ২৫ দেশের প্রকৌশলী এবং ১২ সদস্যের প্যানেল অব এক্সপার্টের মেধা-শ্রমে নির্মিত হয়েছে এই পদ্মা সেতু। আট বছরের এই প্রকল্প বাস্তবায়নে চার হাজারের বেশি মানুষ যুক্ত ছিলেন পদ্মা সেতু নির্মানে। সেতু বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পদ্মা সেতুতে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চীন, কলম্বিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি, হংকং, ভারত, ইতালি, আয়ারল্যান্ড, জাপান, মালয়েশিয়া, নেপাল, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা কাজ করেছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ছিলেন চীনের নাগরিক, তাঁরা নির্মানকাজে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ২০১২ সালে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় সেতু বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ পান বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্বে থাকা খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। পরের আট বছর তিনি ছিলেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার (সেতু কর্তৃপক্ষ) নির্বাহী পরিচালক। বেলায়েত হোসেন, আবু বকর সিদ্দীকের পর বর্তমানে সেতু বিভাগের সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন মনজুর হোসেন। প্যানেল অব এক্সপার্টের চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। তাঁর মৃত্যুর পর এ পদে এসেছেন আরেক বরেণ্য প্রকৌশলী অধ্যাপক শামীম জেড বসুনিয়া।দায়িত্ব পালনকালে মারা গেছেন অধ্যাপক এএমএম শফিউল্লাহ। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ৩২টি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রেষণে আসা কর্মকর্তারা। প্রকল্প শেষে তাদের একটি বড় অংশ অবসরে যাবেন। বাকিরা নিজ নিজ সংস্থায় ফিরে যাবেন। প্রকল্পে ৬৩ জন অস্থায়ী জনবল রয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ প্রকল্পে ১৪ বছর ধরে চাকরি করেছেন। সহকারী পরিচালক, উপসহকারী পরিচালক, হিসাবরক্ষক, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, গাড়িচালক, অফিস সহায়কসহ এসব পদে কর্মরতদের চাকরি স্থায়ী নয়। সরকারের নতুন নিয়মে প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্তদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর বা স্থায়ী করার সুযোগ নেই। সরকার তাঁদের জন্য বিশেষ বিবেচনা না করলে আগামী বছরের ৩০ জুন চাকরি হারাবেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের অস্থায়ী কর্মীরা।