তুলনামূলক দুর্বল প্রকৃতির ব্যক্তিদের জন্য শরীরচর্চা বিপদ ডেকে আনতে পারে। এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষকেরা বলছেন, দুর্বল ব্যক্তিরা নিয়মিত ঘাম ঝরিয়ে শরীরচর্চা করলে মোটর নিউরন ডিজিজে (এমএনডি) ভুগতে পারেন। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের একদল গবেষক জানিয়েছেন, গবেষণার এমন ফলাফলের পরও কারো শরীরচর্চা বন্ধ করে দেওয়া উচিত নয়। বরং এমএনডির ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের শনাক্ত করা দরকার। পাশাপাশি তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে হবে। বিশ্বের প্রতি ৩০০ জনের মধ্যে একজনের এ রোগের ঝুঁকি রয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। বিবিসির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এমএনডিতে আক্রান্তদের মস্তিষ্ক থেকে পেশি অবধি বার্তা পৌঁছানোর প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে মানুষের চলাচল ও কথা বলা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। স্থায়ী পক্ষাঘাত দেখা দিতে পারে। এমনকি আক্রান্তদের নিশ্বাস নিতেও সমস্যা দেখা দেয়। জন্মসূত্রে পাওয়া জিনগত মিশ্রণ এ রোগের অন্যতম কারণ ধরা হয়। এ ছাড়া জীবদ্দশায় পরিবেশগত কিছু কারণে এমএনডি হতে পারে বলেও ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের গবেষকেরা বলছেন, এ রোগের পেছনে প্রকৃতিগতভাবে তুলনামূলক দুর্বল মানুষের নিয়মিত ও কঠোর শরীরচর্চার ভূমিকা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এমএনডি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ার পেছনে ভূমিকা রয়েছে এমন কিছু জিন কঠোর শরীরচর্চার কারণে আচরণ বদলে ফেলতে সক্ষম। এর ফলে যারা প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিনের বেশি ও প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ঘাম ঝরানো শরীরচর্চা করেন তাদের অল্প বয়সেই এমএনডিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ইবায়োমেডিসিন জার্নালে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় যুক্ত ছিলেন জোনাথন কুপার-নক। বিবিসিকে তিনি বলেন, নিয়মিত ঘাম ঝরানো শরীরচর্চা এমএনডিতে আক্রান্তের কারণ হতে পারে। তারকা খেলোয়াড়দের মধ্যে এ রোগের উচ্চহার কাকতালীয় হতে পারে না। তবে এই গবেষণার ফলে শরীরচর্চা বন্ধ না করার আহ্বান জানান জোনাথন কুপার। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না আসলেই কারা ঝুঁকিতে রয়েছেন। আমরা এটাও জানি না, কাকে নিয়মিত শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেওয়া উচিত আর কাকে উচিত নয়। তাই সবাই যদি শরীরচর্চা বন্ধ করে দেন তাহলে ভালোর থেকে খারাপই বেশি হবে।’ ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের নিউরাসায়েন্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডামে পামেলা শো বলেন, কঠোর শারীরিক অনুশীলন ও এমএনডিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করেছে এই গবেষণা। আর মোটর নিউরন ডিজিজ অ্যাসোসিয়েশনের গবেষক ব্রায়ান ডিকি বলেন, এ বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।