কোটচাঁদপুর(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর আব্দুর রাজ্জাক খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহঃ শিক্ষিকা নন্দিতা রানীর বিরুদ্ধে ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন (১০) নামে এক শিক্ষার্থীকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষিকা একই উপজেলার সহকারি শিক্ষা অফিসার বলরাম সাহার স্ত্রী।
গত ২০ মার্চ রবিবার উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এতে ওই শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে এ ঘটনার সুষ্ট বিচার চেয়ে মেয়েকে নিয়ে দারে দারে ঘুরছেন নির্যাতিতা ওই শিক্ষার্থীর দিন মজুর মা জেসমিন খাতুন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০ মার্চ রোববার আব্দুর রাজ্জাক খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন প্রতিদিনের ন্যায় বিদ্যালয়ে যায়। ঘটনার দিন বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের শিক্ষিকা নন্দিতা রাণী তার পুত্র সন্তানকে নিয়ে ক্লাসের কার্যক্রম চালাচ্ছিল। ছেলে বিরক্ত করার এক পর্যায়ে তিনি রাগান্বিত হয়ে পড়েন। এবং পড়া না পারার অযুহাতে আমার কন্যাকে বেদম প্রহার করেন।
এসময় সে অচেতন হয়ে পড়লে সহপাঠি সহ অন্যান্য শিক্ষিকারা ছুটে আসেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে। পরবর্তিতে আমার মেয়েকে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যায়। বর্তমানে আমার মেয়ে ব্যাথা ও জ্বরে ভুগছে। জেসমিন খাতুন জানান, আমি গরিব হওয়ায় ধার দেনা করে আমার মেয়ের চিকিৎসা করেছি। এরই মধ্যে ২ হাজারের বেশি টাকা খরচ হয়ে গেছে। পরবর্তিতে আমি ওই শিক্ষিকার নিকট আমার মেয়ের চিকিৎসার খরচের বিষয়ে বলতে গেলে তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে বলে আমার স্বামী উপজেলা শিক্ষা অফিসার। আপনি আমার কিছুই করতে পারবেন না। এসময় তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, কিছু দিনের মধ্যেই আমি অন্যত্র চলে যাব। তাই আমি ইচ্ছামত যাকে খুশি তাকে মারব।
ঘটনার বিষযে অভিযুক্ত শিক্ষিকা নন্দিতা রাণীর সঙ্গে মুঠোফেনে কথা হলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করে বলেন, মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। পরে তিনি বলেন, ৫ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে বিয়াদবি করার জন্য একটা থাপ্পড় মেরে ছিলাম। পরবতির্তে বিষয়টি নিয়ে তার অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষা অফিসে মিটমাট হয়েছে। এবং তাকে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন নাহার জানান, মারধরের ঘটনা ঘটেছে। আমি ক্লাস রুমে গিয়ে দেখি ওই বাচ্চা কান্না-কাটি করছে। পরে বাচ্চাটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এসময় তিনি বলেন, নন্দিতা ম্যাডামের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন শেষ নেই। তিনি আমার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। এমনকি বিদ্যালয়ের অন্য দুই শিক্ষিকা রেশমা খাতুন ও সোনিয়া খাতুনের সঙ্গে তার কথা হয়না।
বিদ্যালয়ের সভাপতি সামছুন্নাহার বলেন, শিক্ষার্থীকে মারপিটের ঘটনায় বিষয়টি মীমাংশা করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জানতে চায়লে তিনি বলেন, ঐটা কি আপনার জানতে হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অসিত বরণ পাল জানান, ঘটনাটি শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বিষযটি মীমাংশা করা হয়েছে। এসময় তিনি বলেন,অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমান না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।