এ’বছরই শেষ হচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের কাজ। টানেলটি চালু হলে বদলে যাবে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সামগ্রিক চিত্র। দক্ষিণ চট্টগ্রাম হবে দেশের নতুন শিল্প এলাকা। আরো বিকাশ ঘটবে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের। চীনের সাংহাই সিটির আদলে চট্টগ্রাম মহানগরী ও আনোয়ারাকে সম্পৃক্ত করে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ হিসাবে গড়ে তুলতে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মানের উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার। কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। টানেল নির্মাণে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ৪ হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা আর চীন সরকার ঋণ দিয়েছে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা। টানেল চালু হলে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা তৈরী করবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ী শিল্পপতিরা। বিজিএমইএ প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, “এখানে টানেল হচ্ছে, ফ্লাইওভার হচ্ছে, মিরসরাই ইকোনোমিক জোন হয়েছে, দক্ষিণ চট্টগ্রামে বিভিন্ন আকোনোমিক জোন করে দিচ্ছে যাতে বিদেশিরা এখানে ইনভেস্ট করতে পারে।” টানেলের কারণে কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীরে নতুন নতুন শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠার পাশাপাশি কক্সবাজার টেকনাফ পর্যটন শিল্পও লাভাবান হবে। পতেঙ্গা-বন্দর আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ বলেন, “কর্ণফুলি সাউথ এব নর্থ এ যে ইকোনোমিক জোনগুলো হচ্ছে এগুলোকে মেগাজোন বলা হয়। মিরেরসরাই ইকোনোমিক জোন আর কেইপিজেড এই দুটোকে এক জায়গায় করলে সারাবাংলাদেশের ইকোনোমিক জোনের টোটাল এরিয়ার সমান হবে।” এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টানেলের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন প্রকল্প পরিচালক। তিনি জানান, সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ডিসেম্বরেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বঙ্গবন্ধু শে মুজিবুর রহমান টানেল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ বলেন, “এমনভাবে তৈরি করা হবে যাতে ইমার্জেন্সিতে মানুষ একটা টিউব থেকে আরেকটা টিউবে চলে যেতে পারবে। এছাড়াও আমাদের যে ২ হাজার ৪৫০ মিটার টিউবের ল্যান্ড সেখানে ৮০ মিটার পর পর স্লাইডিং করে নিচে চলে যাওয়া যাবে, কোনো সমস্যা হলে।” প্রায় ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটারের এই টানেলের প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। প্রতিটি টিউবে থাকছে দুটি করে মোট চার লেনের সড়ক। মূল টানেলের সাথে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার। থাকছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ একটি ওভারব্রীজ।