বন্যায় বিপর্যস্ত হয়েছে দেশ। বন্যার প্রভাব পড়েছে সব কিছুতেই। বাদ যায়নি নিত্যপণ্যের বাজার। বন্যার প্রভাবে বেড়ে গেছে বিভিন্ন পণ্যের দাম। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কৃষি মার্কেটসহ ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ৪০ টাকা করে বিক্রি হলেও এখন তা কেজিপ্রতি ৫০ টাকা। আলুর দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, পাকা টমেটো ৭০ থেকে ৮০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বেগুনের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। করলার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে, কাঁচা কলার হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া অন্যান্য সবজির দামও বেশি। তবে মৌসুম হওয়ায় লেবুর দাম তুলনামূলক কম। কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আক্কাস মিয়া বলেন, গত ৩-৪ দিন ধরেই সবজির দাম বাড়ছে। উত্তরবঙ্গ ও সিলেট বিভাগে বন্যায় বহু ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে। কৃষকের অনেক ফসলও নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া বন্যায় যান চলাচলও কিছুটা ব্যাহত ছিল, যার কারণে সবজির দাম বাড়ছে। বাজার করতে আসা ক্রেতা হামিদুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে আমরা হয়তো বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারব না। না খেয়েই মরতে হবে। মাছ-মাংস তো কিনতেই পারি না। একটু সবজি খাব, সেই সবজির দামও অনেক। সব কিছু আমাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারে এমন কোনো জিনিস নেই যার দাম বাড়েনি। এছাড়াও বেড়েছে চালের দাম। মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা করে। দেশী মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকায়। পোলাও চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। অপরিবর্তিত আছে মুদি মালামালের দাম। এছাড়া গরুর মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে খাসির মাংসের দাম। বাজার ঘুরে দেখা যায়, খাসির মাংস কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে। আগে ৮০০-৮৫০ টাকা থাকলেও ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুরগির বাজার গত সপ্তাহের মতোই আছে। তবে বন্যার কারণে হয়তো দাম বাড়তে পারে। আজকের বাজারে ব্রয়লার ১৫০ টাকা, সোনালী ২৮০ টাকা ও পাকিস্তানি কক ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে খুচরা বাজারে ডিমের হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর মালিবাগ বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকায়। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় রুই কেজিপ্রতি ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট কাতল ৩০০ হলেও বড় কাতল ৩৫০-৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩শ-১৪শ টাকা, বড় সাইজের বোয়াল ৬০০-৭০০ ও ছোট সাইজের বোয়াল ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ছোট পবদা ৩৫০ আর বড় পাবদা ৫৫০-৬০০, পাঙ্গাশ ১৮০-২২০, আইড় ছোট ৩৫০ আর বড় ৬০০-৭০০ টাকা, টাটকিনি ১৫০, সরপুঁটি ২০০, সামুদ্রিক কোরাল ৪০০, রূপচাঁদা ৬০০, সিলভার কার্প ২০০, চাষের শিং ৩৫০-৪০০, কৈ ১৮০-২০০, শোল ৭০০-৮০০ ও দেশি মাগুর ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।