ঢাকা মহানগরীর পল্টন এলাকা হতে অপহরণের ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপহৃত ভুক্তভোগীকে উদ্ধারপূর্বক সংঘবদ্ধ অপহরনকারী চক্রের ০৪ সদস্য’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
১। এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি এসব ঘৃণিত অপহরনকারী চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব সদা সচেষ্ট।
২। গত ১২/০৪/২০২২ ইং তারিখ ভুক্তভোগীর বাবা র্যাব-৪ এর নিকট লিখিতভাবে একটি অভিযোগ দায়ের করেন যে, কতিপয় দুষ্কৃতিকারী লোক তার ছেলে মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম (২২)’কে নগদ ০৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ভাল বেতনে সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। গত ১২/০৪/২০২২ ইং তারিখ অপহরণ চক্রের সদস্য মোঃ মতিয়ার রহমান ভুক্তভোগীকে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর বাবা তার ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পায়। সেদিন বেলা অনুমান ১৫.০০ ঘটিকার সময় ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল দিয়ে তার বাবাকে জনৈক আরিফুল ইসলাম পরিচয় দিয়ে জানায় যে, তার ছেলে তাদের কাছে আছে এবং তাকে ফেরত পেতে হলে প্রাথমিকভাবে তাদেরকে ০১ লক্ষ টাকা মুক্তিপন হিসেবে দিতে হবে; অন্যথায় তারা তাকে প্রাণে মেরে ফেলবে এবং তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ অন্যত্র বিক্রি করে দেবে।
৩। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল অদ্য ১৩/০৪/২০২২ ইং তারিখ ১৪.৩০ ঘটিকার সময় রাজধানীর পল্টন থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধারপূর্বক নিম্নোক্ত ০৪ জন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়ঃ
(ক) মোঃ আরিফুল ইসলাম মাসুম (৪৪), জেলা-ঢাকা।
(খ) মোঃ রেফাজুল ইসলাম লিংকন (২৭), জেলা-ঢাকা।
(গ) মোঃ মতিয়ার রহমান (৫০), জেলা-রংপুর।
(ঘ) মোঃ মজিবর রহমান (৫২), জেলা-বাহ্মনবাড়িয়া।
৪। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা একে অপরের পূর্ব পরিচিত। তারা পরস্পর যোগসাজসে প্রথমে দেশের বিভিন্ন এলাকার শিক্ষিত বেকার যুব সমাজকে টার্গেট করে তাদের সাথে কৌশলে সখ্যতা তৈরি করে এবং ভুক্তভোগীদেরকে নগদ অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে ভাল বেতনে চাকুরীর প্রলোভন দেখায়। এতে অনেক চাকুরী প্রত্যাশী বেকার লোকজন তাদের কথা সরল মনে বিশ্বাস করে তাদের দেওয়া প্রস্তাবে রাজী হয়। তখন আসামীরা সুকৌশলে নিয়োগপত্র দেয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদেরকে তাদের সুবিধাজনক স্থানে আসতে বলে। নিয়োগপত্র পাওয়ার আশায় ভুক্তভোগীরা সেখানে গেলে আসামীরা তাদেরকে আটকে রেখে মারধর করাসহ বিভিন্ন অমানবিক নির্যাতন চালায় এবং তাদের পরিবারের নিকট মোবাইল করে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে।
৫। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন এবং এই ধরনের অপহরণকারীর বিরুদ্ধে র্যাবের জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।