অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ জুন) জমকালো আয়োজনে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে এর উদ্বোধন করেন তিনি। এর আগে শনিবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জমকালো আয়োজনে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে শুরু হয় বহুল প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে দেশি বিদেশি কয়েক হাজার অতিথি উপস্থিত হন। সুধী সমাবেশে অংশগ্রহণ শেষে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম ও সিলমোহর প্রকাশ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী টোল প্লাজায় যান। সেখানে তিনি টোল প্রদান করে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচন করেন। উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যাচ্ছেন। জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক এবং ম্যুরাল-২ উন্মোচন করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠাল বাড়িতে যাবেন। সেখানে তিনি আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন। আওয়ামী লীগ এ জনসভায় ১০ লাখ লোক জমায়েত করার ঘোষণা দিয়েছেন। জনসভায় যোগদান শেষে জাজিরা প্রান্তের সার্ভিস এরিয়া-২ তে যাবেন। সেখানে তিনি হেলিকপ্টারে ঢাকায় ফিরে আসবেন। উদ্বোধনের পরের দিন ২৬ জুন ভোর ৬টা থেকে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের সড়ক যোগাযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হল আজ। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা বহুমুখী সেতু রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বড় শহরের সঙ্গে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপন করবে। পদ্মা সেতু দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার উন্নয়নের সঙ্গে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই সেতু শুধু একটি বড় অবকাঠামো নয়, এটি বিদেশি অর্থায়ন ছাড়া প্রথমবারের মতো বাস্তবায়িত বাংলাদেশের একটি ‘মেগা’ প্রকল্প। দেশীয় অর্থায়নে বড় অবকাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রকাশ করে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে। এটি প্রমত্ত পদ্মার বুকে কারিগরি নানা জটিলতা কাটিয়ে নির্মাণ করা একটি সেতু। এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষ ও ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। সেতু উদ্বোধনের দিন যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে পদ্মা সেতুর দুই পার। সমাবেশস্থলে পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছে সেনাবাহিনী, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসফ)সহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকেও নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।