সব বাবা-মায়ের চেষ্টা থাকে সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। আর ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই কোনটা ভুল ও কোনটা ঠিক তার শিক্ষা দেওয়া অতি জরুরি। সাধারণত ছোটবেলার শিক্ষাটাই সন্তানের বড় হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই এই সময়েই সন্তানকে ভালো কাজ ও গুণ সম্পর্কে জানাতে হবে, শেখাতে হবে। তবেই সে আদর্শ মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠবে। শিশুর সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা ও মানসিক বিকাশে পরিবারের ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার থেকেই আসে প্রথম শিক্ষা। তাই পরিবারের সদস্য হিসেবে বাবা-মাকেই শিশুদের বেড়ে ওঠায় কাজ করতে হবে। ছোটবেলা থেকেই শেখাতে হবে আদব কায়দা। প্রায় ছোটদের উদ্দেশ্যে গুরুজনদের বলতে শোনা যায়, ‘মানুষের মতো মানুষ হও’। এই মানুষের মতো মানুষ হতে হলে সন্তানকে ছোটবেলায় কিছু ভালো অভ্যাস শেখাতে হবে। ছোটবেলাতেই যদি কোনো শিশু যথাযথ শিক্ষা পায়, তবেই অনেক সহজ হয়ে যায়; এই মানুষের মতো মানুষ হওয়ার পথ। ভালো মানুষ হিসেবে সন্তানকে বড় করতে চাইলে শৈশবেই কিছু কিছু গুণ রপ্ত করাতে হবে।
আসুন জেনে নিই, সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই যেসব ভালো অভ্যাস বা গুণ শেখাবেন।
১. সহযোগিতা করা
সন্তানকে ছোটবেলা থেকে অন্যের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগিতার মনোভাব তৈরি করতে হবে। শেখাতে হবে মানুষের বিপদে মানুষকে সহযোগিতা করা, যা ছোটবেলা থেকেই তৈরি হওয়া বাঞ্ছনীয়। সমাজকে সম্প্রীতির পথে পরিচালিত করতে এগুলো খুব অপরিহার্য মানবিক বৈশিষ্ট্য। সহযোগিতা ও সহমর্মিতা ছাড়া কোনো মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বাঁচতে পারে না।
২. ভাগ করে নিতে শেখা
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের একজন সদস্য হিসেবে সন্তানকে শেখাতে হবে যেসব বিষয়গুলো, তা বন্ধুদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া উচিত। এতে শিশুমনে বিদ্বেষ ও লোভ জন্ম নিতে পারে না।
৩. শুনতে শেখা
শিশুকে শেখান যে কথা বলা এবং মতামত প্রকাশ করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই অন্যরা যা বলছে তা শোনাও গুরুত্বপূর্ণ। ছোট থেকে অন্যের মতামত ও ভাবনার স্বাধীনতাকে সম্মান করতে শেখা, ভালো মানুষ হয়ে ওঠার জন্য খুবই জরুরি।
৪. সামাজিকতা
শিশুদের শেখানো দরকার কীভাবে অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করতে হয়। অন্যের কথার মাঝে বাধা না দেওয়া এবং অন্যের মতামতকে সম্মান করা ছোটবেলা থেকেই শেখাতে হবে।
৫. চাপ সামলাতে শেখা
ছোট থেকেই সন্তানকে শেখাতে হবে যে কোনো বিপদে হতাশ হওয়া যাবে না। সুখ ও দুঃখ জীবনেরই অংশ। তা মোকাবিলা করতে হবে। কোনো জিনিস মনকে ভারাক্রান্ত করলেও সে সময়ে নিজেকে শান্ত রাখতে হবে এবং চাপে কাবু না হয়ে পড়ে সামনেে এগিয়ে গেলেই সেই চাপ অতিক্রম করা যায়।
৬. একে অপরকে অনুপ্রাণিত করা
শিশুদের ছোট থেকেই শেখানো প্রয়োজন, অনুপ্রেরণা শুধু নিজের নয়, অন্যদের জন্যও জরুরি। এই শিক্ষা পেলে কঠিন সময়ে ভেঙে পড়বে না সন্তান।
৭. অন্যদের নিয়ে মজা না করা
সবাই নিজের মতো করে সুন্দর। অনেক সময় ছোটরা না বোঝেই সহপাঠীর কোনো দুর্বলতার জায়গায় আঘাত করে ফেলে। তাই সন্তানকে শেখাতে হবে, যে যখন যাই বলুক না কেন, কারও সম্পর্কে কখনো কোনো অবমাননাকর মন্তব্য করা উচিত নয়।