ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গণপরিবহন-সংশ্লিষ্টরা যাত্রীদের জিম্মি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল গাবতলী থেকে উত্তরাঞ্চলগামী শ্যামলী বাস কাউন্টার থেকে জানানো হয়, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত শ্যামলীর কোনো টিকিট নেই। তখন সেই কাউন্টার থেকে ঢাকা-নওগাঁগামী বিআরটিসি বাসের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছিল। বিআরটিসিকে প্রতি আসনের ভাড়া ১ হাজার ১০০ টাকা করে রাখতে দেখা যায়। ১ হাজার ১০০ টাকা দিয়ে বিআরটিসি বাসে নওগাঁ যেতে রাজি নন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আহাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘শ্যামলীর বাস কাউন্টার থেকে বিআরটিসি বাসের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। তাও আবার নন-এসি বাসের ভাড়া ১ হাজার ১০০ টাকা। অথচ ঢাকা থেকে নওগাঁর ভাড়া ৫৮০ টাকা। আরেকটু দেখব, তাই টিকিট কাটলাম না।’ কেন বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন জানতে চাইলে শ্যামলীর কাউন্টার মাস্টার শওকত আলী বাবু বলেন, ‘শ্যামলী বাসের কোনো টিকিট নেই। আমরা কিছু বাস রিজার্ভ নিয়ে চালাচ্ছি। বিআরটিসি বাস রিজার্ভ নেয়ার সময় তারা আমাদের কাছ থেকে বেশি টাকা রেখেছেন। তাই আমরাও বাড়তি ভাড়া নিচ্ছি।’শ্যামলীর ঠিক পাশের রেখা এন্টারপ্রাইজ কাউন্টারের সামনে বসে এক ব্যক্তি এসি বাসের টিকিট বিক্রি করছিলেন। ঢাকা থেকে রংপুরগামী বাসে তিনি ২ হাজার ২০০ টাকা চাচ্ছিলেন। এত টাকা চাইছেন কেনÑজানতে চাইলে নাম না বলে তিনি বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে খরচ বেশি। সে জন্য একটু বেশি রাখছি।’ অনিমেষ রায় ও ডুবার বসু নামের দুই ব্যক্তি যাবেন সাতক্ষীরা। গত মঙ্গলবার তারা ঢাকায় এসেছিলেন পারিবারিক কাজে। টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি এসি বাসে ৯০০ টাকা করে মোট ১ হাজার ৮০০ টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে তারা সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আসেন। গত বুধবার রাতে গুলিস্তান বাস কাউন্টার থেকে সাতক্ষীরাগামী কোনো বাসে আসন না পেয়ে থেকে যান। গতকাল তাদের কাছে রাজধানীর শ্যামলী থেকে সাতক্ষীরাগামী এসি বাসের ভাড়া চাওয়া হয় ২ হাজার টাকা। এত টাকা দিয়ে টিকিট না কেটে দুপুরে গাবতলী বাস টার্মিনালে এলে ছয়-সাতটি পরিবহনের কাউন্টার ঘুরে কোনো টিকিট পাননি। অবশেষে এসডি পরিবহন নামে খুলনাগামী একটি বাসে জনপ্রতি ১ হাজার টাকা করে দুটি টিকিট পান। অনিমেষ রায় বলেন, এসি বাসে পদ্মা সেতু হয়ে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় এলাম ৯০০ টাকায়। আর এখন যাচ্ছি নন-এসি বাসে খুলনা পর্যন্ত ১ হাজার টাকায়। বিআরটিএ’র আদালত-৮-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘যারা বাড়তি ভাড়া আদায় করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। দুপুর পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায়ের দায়ে ১০টি বাসকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি।’