মনির খাঁন কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগরে উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের বল্লভদী গ্রামে ১৯২নং বল্লভদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নিমার্ণের ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য এখনো নির্মিত হয়নি সংযোগ সড়ক। এতে বর্ষা মৌসুমে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে পারছে না। এ ছাড়া এ বিদ্যালয়ে নেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এবং বিশুদ্ধ পানি। যার ফলে অনেকটা মানবিক সংকটের মাধ্যমেই পাঠ গ্রহন করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে ৩১মে “সড়ক বিহীন বিলের মাঝে প্রাইমারি স্কুল,ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা” এই শিরোনামে পথের আলো অনলাইন খবর সংবাদ প্রকাশের পর সেই স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য মিষ্টি নিয়ে স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছেন জাহাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ সওকত আহম্মেদ।
রোববার সকালে সেই স্কুলে গিয়ে স্কুলের নানা সমস্যার কথা শুনে সে সমস্যাগুলো দ্রুত নিরসনের ও আশ্বাস দেন তিনি। এসময় সওকত আহম্মেদ সকল শিক্ষার্থীদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফওজিয়া খানম, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, শিক্ষক প্রতিনিধি বাবুল মমিন, ইউপি সদস্য ইদ্রিস মিয়া, জসিম উদ্দিন রাসেল, নূরজাহান বেগম প্রমুখ। এর আগে গত বৃহস্পতিবার স্কুল পরিদর্শনে আসেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল আলম সরকার কিশোর। জানা যায়, ১৯৯৫ সালে উপজেলার রানীমুহুরী-বড়িইয়াকুড়ি সড়কের পাশে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। আর ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়। পরে বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়লে ২০১৭ সালে পাশের বিলের মাঝে নতুন ভবন স্থাপন করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচী (পিইডিপি-৩) এর আওতায় ৫ কক্ষ বিশিষ্ট আধুনিক একটি দ্বিতল একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু আধুনিক এ ভবনটিই শিক্ষার্থীদের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, সড়ক থেকে কিছুটা দূরে ভবনটি নির্মান করা হয়েছে, কিন্তু বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য নির্মান করা হয়নি কোন সড়ক। চারিদিকে ফসলি জমি, একটু বৃষ্টিতেই স্কুল চত্বরে পানি জমে থাকে। বিশুদ্ধ পানির জন্য সাম্পারসিপল পাম্প বসানো হলেও পাম্প ও পাইপ চুরি হয়ে গেছে। বিদ্যুতের কারনে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয় শিক্ষা থেকে। বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য সংশ্লিষ্টরা বৈদ্যুতিক খুটি ব্যাবস্থা করেও জমির মালিকদের আপত্তির কারনে বিদ্যুৎ সংযোগ আনতে পারছেনা এ বিদ্যালয়ে। ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ সওকত আহম্মেদ বলেন, আমি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করেছি কয়েকমাস হলো। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর এ স্কুলের বেহাল অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারি। জলাবদ্ধতা নিরসনে স্কুলের মাঠ ভড়াট, যাতায়াতের রাস্তা ও বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যাপারে এলাকাবাসি, প্রথমিক শিক্ষা অফিসার ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন (এফসিএ)’র সাথে আলাপ করবো। আমি এ স্কুলের এ সমস্যাগুলো নিরসনের জন্য সরকারি বরাদ্দের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে কাজ করে যাবো। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফওজিয়া খানম, গণমাধ্যমে এ স্কুল নিয়ে সংবাদপ্রকাশের পর গত বৃহস্পতিবার স্কুল পরিদর্শনে আসেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল আলম সরকার কিশোর, আজকে এসেছেন এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ সওকত আহাম্মদ। এ স্কুলের উন্নয়ন নিয়ে নানা বিষয়ে কথা হয়েছে আশা করছি এ স্কুলের যাবতীয় সমস্যা দ্রুত নিরসন হয়ে যাবে জানান।