মনির খাঁন, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি।
কুমিল্লায় বিতর্কিত ট্রাফিক প্রধান (টিআই অ্যাডমিন) এমদাদুল হকের বদলিতে নগরীজুড়ে স্বস্তি বিরাজ করছে। ওই কর্মকর্তাকে কুমিল্লা থেকে চট্রগ্রাম রেঞ্জের বান্দরবান জেলায় বদলি করা হয়েছে। শুক্রবার তার বদলির বিষয়টি জেলা পুলিশের বিশেষ সূত্র থেকে জানা গেছে। টিআই এমদাদুল হকের বদলির খবরে নগরীর সাধারণ বাসিন্দাসহ চালকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এর আগে গত ১৬ মার্চ ওই ট্রাফিক কর্মকর্তাসহ জেলার ট্রাফিক বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অনিয়ম এবং চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে ভুক্তভোগী চালকরা। পরদিন দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে খবর প্রকাশ হয়। জানা যায়, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এমদাদুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বাসিন্দা হলেও শিক্ষা জীবন থেকেই স্থায়ীভাবে কুমিল্লায় বসবাস করে আসছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লায় তিনি একটি বিশাল সার্কেল গড়ে তুলেছেন। পরে চাকরি জীবনে কুমিল্লায় ট্রাফিক বিভাগে যোগদান করেও একই কায়দায় সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন।
নগরীতে চলাচলকারী সিএনজি চালকদের অভিযোগ- ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাদের নিযুক্ত দালালরা প্রতি সিএনজি থেকে মাসে ১২শ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। নগরীতে প্রায় ছয় শতাধিক সিএনজি চলাচল করছে। একইভাবে ব্যাটারিচালিত প্রতি রিকশা থেকে ৫শ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। প্রায় ৩ হাজার ব্যটারিচালিত রিকশা চলছে নগরীর সড়কগুলোতে। এছাড়া ইজিবাইক ও পিকআপসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করতে ট্রাফিক পুলিশকে চাঁদা দিতে হয় বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এসব চাঁদা আদায় করছে ট্রাফিক নিযুক্ত দালাল সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ইন্সপেক্টর এমদাদুল হক কুমিল্লায় ট্রাফিক বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগদানের পর নগরীর সড়কে চলাচলকারী থ্রি-হুইলার চালকদের ওপর চাঁদার খড়গ অনেক হারে বৃদ্ধি পায় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ট্রাফিক বিভাগের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে গত ১৬ মার্চ নগরীর কান্দিরপাড়-পদুয়ার বাজার সড়ক অবরোধ করে চালকরা। ওইদিন নগরীর প্রধান এ সড়কে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে ভুক্তভোগীরা। পরে সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
এদিকে শুধু যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়ের ঘটনাই নয়, নগরীর সবকটি সড়কে প্রতিনিয়ত যানজটের ঘটনায় ট্রাফিক প্রধানসহ এ বিভাগের কর্মরতদের ওপর নাখোশ ছিল নগরের বাসিন্দারা। এসব নানা ঘটনায় বিতর্কিত হয়ে পড়েছিলেন সদ্য বিদায়ী ট্রাফিক প্রধান এমদাদুল হক। সম্প্রতি তার বদলির খবরে নগরীর চালকসহ বাসিন্দাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিদায়ী ট্রাফিক প্রধান এমদাদুল হক বলেন, আমি কোনো প্রকার যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়ের সঙ্গে জড়িত নই। অভিযোগকারীদের দাবি সঠিক নয়, কুমিল্লায় আমি কোনো সিন্ডিকেটের সঙ্গেও জড়িত না। যতদিন চাকরি করেছি স্বচ্ছতার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করেছি। এছাড়া আমি স্বেচ্ছায় কুমিল্লা থেকে বদলি হয়েছি।