রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে গাবতলী, সাড়ে আট কিলোমিটারেরও বেশি। কিন্তু, বুধবার বিকেলে একটি মাইক্রোবাসে করে যেতে সময় লাগল মাত্র ১৭ মিনিট। অথচ, অন্যান্য সময় দিনের বেলা এ পথ পাড়ি দিতে অন্তত এক ঘণ্টা লেগে যায়। যদিও গাবতলী গিয়ে দেখা গেল বাসের জটলা। কারওয়ান বাজার-ফার্মগেট মাড়িয়ে শ্যামলী হয়ে গাবতলী, এই একই পথ ধরে ফেরার সময়ও ২০ মিনিটের মতো। তবে, কারওয়ান বাজারে এসে একটি বড় সিগন্যালের দেখা মিলল। কোথাও কোথাও হালকা জটলার খবরও মিলছে। ঢাকার জজ কোর্টের আইনজীবী শুভ্র সিনহা রায় তাঁর পেশাগত কাজ শেষে সদরঘাটের রায়সাহেব বাজার থেকে দুপুর ১টা ৫ মিনিটের দিকে রওনা দিয়ে কারওয়ান বাজার এসে পৌঁছান ১টা ৩৫ মিনিটে। শুভ্র সিনহা বলেন, ‘অন্যদিনের দুঘণ্টার পথ আজ ৩০ মিনিটে এলাম। আজকেই মনে হচ্ছে, ঢাকা ফাঁকা হতে শুরু করেছে। মানুষজন ঈদে গ্রামে যেতে শুরু করেছে।’ এদিকে ঢাকার মাতুয়াইল এলাকা থেকে পুরান ঢাকায় যাচ্ছিলেন সাব্বির রহমান। তিনি দেখেন রাস্তায় বেশ যানজট। সেখান থেকে তিনি কারওয়ান বাজার আসেন। কথা প্রসঙ্গে বললেন, ‘মানুষজন গ্রামে যেতে শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে। সেজন্য, কোথাও কোথাও যানজট দেখা গেছে।’ তবে, গাবতলীর হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টারে গিয়ে জানা গেল ভিন্ন তথ্য। কাউন্টারের ম্যানেজার নাফিজ আশরাফ বললেন, ‘আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে বাসের আর কোনো সিট ফাঁকা নেই। সব বুকিং হয়ে গেছে। কিন্তু, আজ দুপুর ২টার সময় যে বাস ঢাকা ছেড়ে গেল; সেখানেও ৬ জন যাত্রী কম ছিল। সকালের একটি বাসে চারটি সিট ফাঁকা ছিল। সাধারণত ঈদের সময় কিন্তু এমন হয় না।’
তবে, ভিন্ন চিত্র দেখা গেল সেলফি পরিবহণে। গাবতলীতে সারি সারি দাঁড়িয়ে ছিল পরিবহণ কোম্পানিটির বাস। একটির পর আরেকটি ছেড়েই যাচ্ছে। বাসস্ট্যান্ডের পাশে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, প্রতি তিন থেকে চার মিনিট পর পর একটি করে বাস ছাড়ছে। গাবতলী থেকে আরিচা ফেরিঘাট ভাড়া রাখা হচ্ছে ১৫০ টাকা। সেলফি পরিবহণের চালকের সহকারী মামুন হোসেন বলছিলেন, ‘ভাড়া আগের মতোই আছে। কিন্তু, যাত্রী বাড়ছে। মানুষ একটু কষ্ট করে হলেও সরাসরি বাসে না গিয়ে কেটে কেটে যেতে চান। তাতে করে ফেরিতে অনেক সময় বসে থাকতে হয় না। এখন তিন মিনিট পর পর বাস ছাড়ছে এখান থেকে। তবে, সকালে একবার ফেরিঘাট থেকে ঢাকায় আসার সময় মাত্র সাত জন যাত্রী নিয়ে আসছি। আর টুকটাক কিছু লোকজন উঠেছে, নেমেছে।’ কল্যাণপুরের এসপি গোল্ডেন লাইন কাউন্টারের ম্যানেজার বাবু বলেন, ‘আজ থেকে মানুষজন বেশি যাচ্ছে। এর আগে পরিবারের নারী ও শিশুরা বেশি বেশি ঢাকা ছেড়েছে জ্যামের ভয়ে। আগামীকাল থেকে মোটামুটি পুরোপুরি জ্যাম লেগে যাবে।